সমাজ অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক
কালধ্বনি
In Search of a decent living
জীবনের অন্বেষণে
সমাজ অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক
কালধ্বনি
In Search of a decent living
জীবনের অন্বেষণে
লিখলাম বটে, কারণ খুব সহজ হয়ে গেছে এইসব কথা লেখা! ভাবতেই অবাক লাগছে তোর মৃত্যুর পর আমি তোর স্কেচ করছি, লিখছি কালধ্বনির পাতায়! অনেকেই লিখবেন! তুই এখন আর দেখতেও পাবি না এইসব লেখালিখি! আমার বানান ভুল হবে! ঠিক করার লোক নেই! কারণ তুইই নেই! আমারও দশা খুব একটা সুবিধার নয়!
তোর সঙ্গে আমার প্রথম যোগাযোগ চিড়িয়ামোড়ের প্রয়াত বন্ধু বিপ্লব চক্রবর্তীর ঘরে, সেই ১৯৭৯-৮০ নাগাদ। তারপর বন্দীমুক্তি আন্দোলনে, নানা মিছিলে, নানা জায়গাতেই। মীরাদির ইন্টারভিউ নিতে আমাদের একটা গ্রুপের থেকে পট পত্রিকার প্রথম সংখ্যাতেই আমরা অনেকেই মীরাদির বাড়িতেই গিয়েছিলাম। সেখানেও তোকে কদিন দেখেছিলাম।
তারপর আমার জীবনে কত কিছু ঘটে গেল! খুব বেশি দেখা হতো না, বরং মাঝে মাঝেই প্রশান্তদার সাথে দেখা হতো। কখনো সখনো তোর সঙ্গেও। তেমন কিছু কথাবার্তা হয়নি তখন।
নব্বই দশকের শেষের দিকে আমি কালধ্বনির প্রচ্ছদ আঁকতে শুরু করলাম। সেই সুবাদেই তোর সঙ্গে সাথেই নিয়মিত যোগাযোগ। ধীরে ধীরে কালধ্বনির একজন হয়ে উঠলাম, আর তোর সঙ্গে অন্তরঙ্গতা বাড়তে শুরু হল। তোর তীক্ষ্ণ বুদ্ধি, রসিকতায় শানিত, পড়াশোনা, সামাজিক সাংস্কৃতিক আন্দোলনের খবরাখবর রাখা আমাকে তোর প্রতি ক্রমশই আকৃষ্ট করেছিল ।
মৃত্যু সে যখনই হোক এক সময় দরজায় কড়া নাড়বে! সেসব নিয়ে আমার কোনও চিন্তা নেই! এই যে সৃজন, নির্মলদা, মুকুন্দ কালধ্বনির ঘরেই ছবি হয়ে গেলেন, তার পাশে ধীরে ধীরে তোর ছবিও এখন থেকে টাঙানো থাকবে! এর পর হয়তো...! যাক সেকথা! তোর সঙ্গে আমার সম্পর্ক কত গভীর! একমাত্র প্রশান্তদাই জানেন! ফেসবুক তো হালের ব্যাপার! অতিরিক্ত কথা বলার দোষ আমার চিরকালের! দুর্ভাগ্য যে কথা বলার শক্তিটুকুও নেই এখন! কালধ্বনির ঘরে তুই এলে সবার মধ্যে রসের সঞ্চার হতো! প্রশান্তদা তো বটেই, নির্মলদা, দুলালদা অপেক্ষায় থাকতেন রঙ্গ রসিকতার জন্য! আরো কতো কথা মনে পড়ছে আজ! আমি গ্রুপের দেওয়ালে তোর খবর পেতাম রোজ রোজ! নিয়মিত কালধ্বনির গ্রুপে তোর জন্য নজর ছিল আমার। শুনেছিলাম প্রশান্তদার স্পর্শ চেয়েছিলিস। এটা আমার কাছে স্পর্শানুভূতির প্রতি একটা বিশ্বাস জন্ম দিয়েছে। এইভাবেই মানুষ মানুষকে ছুঁয়ে থাকে। মানুষ তার আপন লোককে ছুঁয়ে থাকতে চায় আমৃত্যু! প্রশান্তদার গ্রুপের লেখাতেই জানলাম তুই আর নেই! ভালো লাগছে না এগুলো লিখতে! তবুও লিখলাম সুব্রত! আমি এখনও ছুঁয়ে আছি তোকে, সুব্রত।