সমাজ অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক
কালধ্বনি
In Search of a decent living
জীবনের অন্বেষণে
সমাজ অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক
কালধ্বনি
In Search of a decent living
জীবনের অন্বেষণে
গত কয়েক বছর ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত এবং মহল থেকে জাত সমীক্ষার দাবি উঠছে। বিহারে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ইতিমধ্যে জাতি সুমারি করা শুরুও হয়েছে। যদিও বিষয়টি জাতীয় জনগণনা সংস্থার করার দায়িত্ব বলেই অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ মনে করেন। কেন জাতি সুমারি করা প্রয়োজন তা নিয়ে নানা রকম ব্যাখ্যা থাকলেও মোদ্দা উদ্দেশ্যটি যে ষোলোআনা রাজনৈতিক তা বুঝতে অবশ্য বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার নেই। তবে, এই ধরনের জাতি গণনা বা সুমারির অন্য গুরুত্বপূর্ণ দিকও রয়েছে। বিশেষ করে অর্থনৈতিক, শিক্ষা এবং সামগ্রিক ভাবে বিভিন্ন জাতির সামাজিক যাপনের ছবিটিও বেশ কিছুটা স্পষ্ট হয়। যাইহোক, এই বিষয় নিয়ে যখন দেশের ইতিউতি আলোচনা, তর্ক-বিতর্ক চলছে সেই সময় হাতে এসে পৌঁছল বাংলার জাত বিন্যাস ও শিল্প নিয়ে ১৯৫১ সালে সুধাংশু কুমার রায়ের লেখা একটি মহামূল্যবান দীর্ঘ প্রবন্ধের বাংলা অনুবাদ। ‘বাংলার কারিগর’। অনুবাদক বিশিষ্ট সমাজ পর্যবেক্ষক, সাহিত্যিক এবং অনুবাদক শৈবাল দত্ত। বইটি প্রকাশ করেছে তথাগত নামে একটি প্রকাশনা সংস্থা।
বইটি নিয়ে আলচনার আগে বইয়ের মলাটের ভিতরের অংশে মূল লেখাটি নিয়ে অশোক মিত্র সম্পাদিত দি ট্রাইবস অ্যান্ড কাস্টস অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল (১৯৫৩)-এ লেখা কথাগুলির উল্লেখ করার লোভ সামলাতে পারছি না। অশোক মিত্র, সুধাংশু রায়ের মূল লেখাটি সম্বন্ধে লিখেছেন, ‘The one great thing among others about the book is its freshness, objectivity and precision. It is a piece of the most authentic reporting and the author has not let one word escape his pen for which he has no knowledge at first hand. (p.297). বাংলায় এই ধরনের কাজ এ যাবৎকাল কেঊ করেছেন বলেও জানা নেই। কিন্তু, কামার থেকে শুরু করে শাঁখারি, তাঁতি, কুমোর শব্দগুলির সঙ্গেই শুধু নয় এই মানুষগুলো এবং তাঁদের পেশা সাধারণ মানুষের কাছে এতটাই পরিচিত এবং ঘনিষ্ঠ যে এঁদের নিয়ে আলাদা করে ভাবার সময় কারও হয়ে ওঠেনি। এঁদের বেশির ভাগই সহনাগরিক হয়ে সমাজে আছেন সমাজের প্রয়োজন মিটিয়েও এক রকম ব্রাত্য হয়েই। সুধাংশুবাবুর আগে বা পরে কেঊ একান্তই বাংলার এই কারিগর এবং তাঁদের জাতবিন্যাস ও শিল্প নিয়ে খুঁটিয়ে সমীক্ষা করে কোনও লেখায় এঁদের কথা তুলে ধরেননি। কিন্তু সে লেখাও বই হিসেবে নয়, দীর্ঘ প্রবন্ধ হিসেবে জনগণনা দপ্তরের নথিতেই লুকিয়ে ছিল। পরবর্তীকালে শৈবাল দত্ত দীর্ঘদিন ওই দপ্তরেই কর্মরত ছিলেন। নিজের আগ্রহে দপ্তরের পুরনো নথি ঘাঁটতে গিয়েই সুধাংশুবাবুর এই লেখাটির সন্ধান পান। মূল লেখাটি ইংরাজি ভাষায়। তাও আবার জনগণনা দপ্তরের দস্তাবেজের ভিতর বন্দি। তবে, ইংরাজি যে লেখাটি পাওয়া গিয়েছে সেটি আসলে বাংলায় লেখা ছিল বলে অশোক মিত্র তাঁর জীবনী ‘তিন কুড়ি দশ’-এ উল্লেখ করেছেন। দুর্ভাগ্যের বিষয় সুধাংশু কুমার রায়ের সেই বাংলায় লেখা ‘বঙ্গের কারিগরদের তাই, এই গুরুত্বপূর্ণ জাতিবিন্যাস ও তাঁদের শিল্প’ বইটি পাওয়া যায় না। সেই বইটি থেকেই অশোক মিত্র ইংরাজিতে তাঁর সম্পাদিত ‘দি ট্রাইবস অ্যান্ড কাস্টস অব ওয়েস্ট বেঙ্গল’ বইয়ে একটি লেখা ছাপেন। তাই, মূল লেখাটি সে ভাবে সাধারণ মানুষ দূরের কথা সমাজবিজ্ঞানীদেরও নজরে পড়েনি।
সেই অর্থে বলতে গেলে শৈবাল দত্তের এই অনুবাদটি ভাষান্তরের ভাষান্তর। যেহেতু সুধাংশুবাবুর বাংলা লেখাটির কোনও হদিশ আজ আর পাওয়া যায় না সেদিক থেকে দেখলে এই অনুবাদটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শৈবাল জাতি বিন্যাসের বদলে জাত বিন্যাস কথাটি ব্যবহার করেছেন এবং যথাযথ ভাবেই তা করেছেন। কারণ, বাঙালি সমাজে ‘কাস্ট’ শব্দটি আদতে জাতি নয় জাত হিসেবেই স্বীকৃত। সেদিকে নজর রেখেই শৈবাল বইয়ের নামকরণ করেছেন।
যাইহোক, বইটির মূল প্রতিপাদ্যের দিকে নজর দেওয়াটা জরুরি। এই বইতে বাংলার মোট ৯টি জাতকে নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সূত্রধার বা সূত্রধ্র, কর্মকার, তন্তুবায়, কুম্ভকার, কান্স্যকার, স্বর্ণকার, শঙ্খকার, চিত্রকর এবং মালাকার বা মালাকর। বইটিতে এই ৯টি কারিগর গোষ্ঠীকে আবার ভাগ করে দেখানো হয়েছে কোন গোষ্ঠী কোন মাধ্যমে তাঁরা কাজ করতেন বা এখনও করে চলেছেন। যেমন, ঘর-বাড়ি তৈরি এবং ঘর-বাড়ি তৈরির সরঞ্জাম প্রস্তুত করতেন সূত্রধাররা। তাতে তাঁরা ব্যবহার করতেন কাঠ, পাথর, মাটি। কাঠ দিয়ে সূত্রধাররা কৃষি সরঞ্জামও তৈরি করতেন। এ ছাড়াও, লোহা দিয়ে কৃষি সরঞ্জাম তৈরি করতেন কর্মকার বা লোহাগড়া কামাররা। সুতি ও রেশম দিয়ে পোশাক তৈরি করতেন তন্তুবায়রা। লোহা ব্যবহার করে কর্মকাররা অস্ত্র তৈরি করতেন। কাঠ এবং মাটি দিয়ে পুতুল, খেলনা ইত্যাদি তৈরি করতেন চিত্রকর ও কুম্ভকাররা। এই রকম ভাবে বাংলার ৯টি কারিগর গোষ্ঠীর কাজের উপর সমীক্ষা-ভিত্তিক তথ্য ছাড়াও বাংলার কোন অঞ্চলে কোন বিশেষ কারিগর গোষ্ঠীর মানুষেরা বসবাস করতেন সেই সন্ধানও দেওয়া রয়েছে বইটিতে।
আজকের বাংলায় এই কারিগর গোষ্ঠীগুলি আর সেভাবে তাঁদের পূর্ব-পুরুষের পেশাগুলিতে প্রায় নেই বললেই চলে। বা বলা ভালো, অধিকাংশ পেশাগুলির ব্যাপক বাণিজ্যিকরণের ফলে বিভিন্ন কারিগর গোষ্ঠীর মানুষের হাতের বাইরে চলে গিয়েছে পেশাগুলি। আজ আর শুধু স্বর্ণকাররাই সোনার অলঙ্কার তৈরি এবং বিক্রি করেন না। যেমন বর্তমান যুগে লোহার যে সমস্ত বস্তু, সে রান্নাবান্নার সরঞ্জাম থেকে শুরু করে ঘরবাড়ি, সেতু নির্মাণের জন্য লোহার রড ইত্যাদি তৈরিতে ক’জন কর্মকার যুক্ত বা বাস্তবের দিকে তাকিয়ে বলা যায় আজকের যুগে এই কাজগুলি কর্মকার জাতের মানুষের পক্ষে করাটা আদৌ সম্ভব কিনা! এ বই যখন লেখা হয়েছে বা সমীক্ষা করা হয়েছে তখনো বাংলার বিশেষ করে গ্রাম বাংলায় এই পেশা-ভিত্তিক জাতগুলির অস্তিত্ব ছিল। তার আগে তো ভীষণ ভাবেই ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে ইউরোপে শিল্প বিপ্লব এবং প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহারের ফলে মানুষের এই সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি আর বিশেষ কোনও জাতের মধ্যে আটকে থাকল না। তার প্রধান কারণ, সমাজের চাহিদা অনুযায়ী এই কারিগরদের পক্ষে পরিমাণ, গুণমান এবং দ্রুত বিভিন্ন বস্তুর যোগান দেওয়া সম্ভব হয়ে উঠল না। তার চাইতেও বড় কথা যেগুলিতে ছিল বাংলার কারিগরদের নিজস্ব হাতের দক্ষতার উজ্জ্বল উপস্থিতি, কালের পরিবর্তনে এবং প্রযুক্তি ও যন্ত্রের দৌলতে সেগুলি রীতিমত শিল্প-বাণিজ্যের আঙিনায় পাকাপাকি ভাবে জায়গা করে নিল। যে কারিগরি শিল্পগুলি ছিল নিতান্তই ক্ষুদ্র সমাজ-নির্ভর জাত-ভিত্তিক শিল্প তাতে যুক্ত হল তুলনামূলক ভাবে বড় পুঁজি। ধীরে ধীরে এই কারিগরি শিল্পের অনেকগুলিই যথার্থই বৃহৎ পুঁজির হাত ধরে বর্তমানে বড় শিল্পের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।
একটা সময় পর্যন্ত এই বাংলায় লোহার সামগ্রী প্রস্তুত বা তৈরির ক্ষেত্রে কামার বা কর্মকার জাতের কথা ছাড়া অন্য কিছু ভাবাই যেত না। সে লাঙলের ফালাই হোক বা কাস্তেই হোক, বা কাটারিই হোক বা হামান দিস্তা কিংবা সাঁড়াশি, লোহার যে কোনও সামগ্রী তৈরির জন্য কামারের বা কর্মকারদের কামারশালাই ছিল ভরসা। এ সব তো গেল কৃষিজ ও গার্হস্থ কাজকর্মের লোহার বস্তুর কথা। অস্ত্র তৈরির ক্ষেত্রেও মূলত ভরসা ছিল ওই কর্মকারের কামারশালাই। তরোয়াল থেকে শুরু ত্রিশুল, বর্শা, বল্লম বা তীর তৈরির জন্যও কামারশালার বিকল্প কিছু ছিল না। সেদিনকার যেদিন ইতিহাসের বিচারে আজ থেকে বহুদিন আগে নয়, সেদিন বাংলার মানুষ ভাবতেও পারত না যে এই সব লৌহ বস্তু সামগ্রী কামারশালা ছাড়া আর কোথাও তৈরি করা যেতে পারে! আর আজ, বিশ্বের বা দেশের কথা বাদ দিয়ে এই বাংলার কথাই যদি ধরা যায় তা হলে লৌহজাত যে সামগ্রীগুলির কথা উপরে আলোচনা করা হল তার সব ক’টিই বৃহৎ বা মাঝারি লৌহ শিল্পের উপর নির্ভরশীল। সেখানে কর্মকার জাতের কোনও স্থানই নেই। তা এখন ব্রাহ্মণ থেকে শুরু করে বদ্যি-কায়স্থ-সহ সমাজের বিভিন্ন জাতের মানুষের শ্রমের বিনিময়ে উৎপাদন হয় ছোট, মাঝারি এবং বড় কারখানায়। যেখানে নানা মাপের পুঁজির বিনিয়্যগ করতে হয়। যার মালিকানা কোনো নির্দিষ্ট জাতের হাতে নেই। আছে ছোট, মাঝারি বা বড় পুঁজির মালিকদের হাতে এবং কোনও কোনও ক্ষেত্রে সরকারের হাতে।
বাংলার স্বর্ণ শিল্পের কথাই ধরা যাক। বর্তমান সময়ে এই শিল্পটির খুবই রমরমা। কিন্তু এই শিল্পের সঙ্গে আজকের বাংলায় ক’ জন স্বর্ণকার জড়িত তা জানতে ও বুঝতে বিশেষ কোনও সমীক্ষা বা গবেষণা না করে শুধুমাত্র নিজেদের চাক্ষুষ এবং সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনের দিকে নজর রাখলে সহজেই অনুমান করা যায়। বাংলার প্রাণকেন্দ্র কলকাতা ছাড়াও জেলা শহর বা মফস্বলেও ঝাঁ- চকচকে জুয়েলারির মালিকদের সিংহভাগই স্বর্ণকার জাতের নয়। এমনকী এই সব সোনার দোকানের কর্মীদের মধ্যেও স্বর্ণকার জাতের মানুষের সংখ্যা প্রায় নেই বললেই চলে। গত ২-৩ দশক ধরে এই বাংলা থেকে প্রচুর শ্রমিক দেশের নানা পান্তে পাড়ি দিচ্ছেন। এঁদের একটা উল্লেখযোগ্য সংখ্যা দিল্লি, গুজরাত, মহারাষ্ট্রের মুম্বই, কেরল এবং তামিলনাড়ুর বিভিন্ন স্বর্ণ শিল্প সংস্থায় কাজ করতে যান। এঁরা প্রায় কেউই স্বর্ণকার জাতের নয়/ এঁরা হিন্দু সম্পদায়ের বিভিন্ন জাতের এমনকী বহু মুসলিম শ্রমিকও এঁদের মধ্যে রয়েছেন। স্বর্ণ ও হীরা শিল্প এই মুহূর্তে দেশে এবং এই রাজ্যের অর্থনীতিতেও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা দখল করে নিয়েছে। কিন্তু এখানেও সেই পুঁজির প্রশ্ন এসে যায়। আজকের বাংলা স্বর্ণ শিল্পের নিয়ন্ত্রক কিন্তু স্বর্ণকার জাত নয়। এই শিল্প কিন্তু মাঝারি এবং কিয়দংশে বৃহৎ পুঁজির নিয়ন্ত্রণে। সেখানে স্বর্ণকার জাতের বিশেষ কোনও লাভ যে হয়নি এ কথা নিশিত ভাবেই বলা যায়।
আজকের বাংলায় কেন সারা দেশে জাত-ভিত্তিক-শিল্পের সেভাবে আর কোনও আলাদা স্থান আছে বলে মনে করার কোনও কারণ নেই। তা সত্ত্বেও আজকের বাংলায় বিশেষ করে প্রত্যন্ত গ্রাম বাংলায় এই জাত-ভিত্তিক কারিগরদের উপস্থিতি ইতিউতি চোখে পড়ে। তবে, এখন আর এঁদের অধিকাংশই পূর্বপুরুষের পেশায় নেই। অন্যান্য নানা পেশায় আর পাঁচটা বাঙালির মতো উপার্জন করে চলেছেন। এঁদের প্রায় সকলেই তপশিলি জাতিভূক্ত হওয়ার ফলে জাত-সম্প্রদায়ের সামান্য একটি অংশ সরকারি এবং সরকার পোষিত সংস্থায় কাজকর্মও করছেন। কিন্তু, এ কথা অনস্বীকার্য, এই ৯টি কারিগর জাতের অধিকাংশ মানুষই বাংলায় আজ চরম দারিদ্রের মধ্যে কাটাচ্ছেন। তন্তুবায় বা তাঁতিদের অবস্থাও আজ প্রযুক্তির কারণে বিশেষ করে পাওয়ারলুমের কারণে অত্যন্ত সংকটের সামনে দাঁড়িয়েছে। বাংলার বিশেষ করে পশ্চিমবাংলার যে এলাকাগুলিতে তন্তুবায়দের কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে ছিল আজ সেই সব এলাকাগুলিতে গেলে তাঁতিদের দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়া কিছু কানে আসে না।
যাইহোক, ফিরে আসা যাক আলোচ্য বইটি প্রসঙ্গে। বইটি এখন এই সময়েও গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রাসঙ্গিক। প্রথম কথা হল, যে কোনও সংস্কৃতি এবং বিশেষ করে কোনও একটি সমাজের আর্থ-সামাজিক ইতিহাসকে না জানলে সেই সমাজ এবং জাতি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া কঠিন এবং ভবিষ্যতে সেই জাতির শিকড় সন্ধানেও অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। সেই জায়গা থেকে এই বইটির গুরুত্ব এক কথায় অপরিসীম। বাংলার কারিগর অর্থাৎ যারা বাংলার অর্থনীতির ভিত তৈরি করেছেন, এক কথায় তাঁদের ঠিকুজি-কুষ্ঠী মায় শিকড়ের সন্ধান রয়েছে সুধাংশুবাবুর এই বইয়ে। এই বইয়ে যা রয়েছে তাঁ অবশ্যই শুধুমাত্র ‘আকাদেমিক’ পরিসরেই গণ্ডীবদ্ধ করে রাখা নয়, ক্ষেত্রসমীক্ষার নিবিড় এক অনুসন্ধানের দিকদর্শক বলা যেতেই পারে। পাশাপাশি, এ কথাও স্বীকার করতে হবে অনুবাদক শৈবাল দত্তের সাবলীল ভাষায় অনুবাদের ফলে কেবল মাত্র বর্তমানের বা ভবিষ্যতের গবেষকদের কাজেই লাগবে না বাংলার কারিগর, শিল্প এবং অর্থনৈতিক বিবর্তনের বিষয়ে যাঁদের আগ্রহ রয়েছে তাদেরও তৃপ্ত করবে এই বইটি।
অনুবাদ হলেও এই ‘তথাগত’ প্রকাশনের এই বইটি কারিগরি শিল্পকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এই বাংলার জাত বিন্যাসের ক্ষেত্রে একটি আকর গ্রন্থ হিসেবেই পাঠক ও গবেষকদের কাছে বিবেচিত হওয়ার দাবি রাখে।