সমাজ অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক
কালধ্বনি
In Search of a decent living
জীবনের অন্বেষণে
সমাজ অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক
কালধ্বনি
In Search of a decent living
জীবনের অন্বেষণে
প্রচ্ছদঃ কালধ্বনি সেপ্টেম্বর ২০২৩ সপ্তবিংশ বর্ষ
আনুভূমিক ত্রিকোণাকৃত, অবিন্যস্ত, সামঞ্জস্যহীন, টুকরো টুকরো৷ উলম্ব যূথবদ্ধ, রহস্যে আবৃত এক মানবী অবয়ব। ওপর নীচে বহুবাহুসমষ্টি যুগলমূর্তি।
স্তনযুগল ক্ষীণ, ক্ষুধাদীর্ণ, দৃষ্টির তীক্ষ্ম অভিব্যক্তি, অস্পষ্ট কিন্তু বাঙ্ময়; - আরক্ত। হাতপায়ের র্নিমীয়মান অস্থি সঞ্চালনের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে সমষ্টি মানুষের আর্তচিৎকার। বৃশ্চিক-দংশন রূপারূপ।
মস্তিষ্কে আর্টের আস্ফালন। তোমার আমার চোখে কালো রঙের নিকষ আস্ফালন। গগনচুম্বি আকাশকুসুম, ঝাঁপ দেবার আগের মূহুর্তে কোন এক মানবিক জোনাকি গাছ৷ রূপ-অরূপের সর্পিল আবর্তনে ত্রিভুজের গায়ে রঙ লাগিয়ে ক্ষান্ত হয়৷ আমি, তুমি, আমরা যেন সমীরের ছবির কুশীলব; কিছু বলতে চাইছে, জড়িয়ে ধরে মৃত্তিকা মা আমার, তোমার চোখে চোখ রাখার সাহস আমার নেই।
আমি তুমি এই আত্মমর্যাদার দিকে তাকিয়ে আকাশ নক্ষত্রে ডানা মেলি। তোমার ছবি মর্যাদা আজ পাদপ্রদীপের আলোয় উদ্ভাসিত হচ্ছে কি?
আমার! মানবী শরীর, সর্পিল অভিব্যক্তি৷ ভেঙে পড়া স্তনযুগল-
আমার প্রিয় নারীর মুখ চেনা বা অচেনা৷ তির্যক বাঁকে মনসামঙ্গল, সাপুড়ে গানের সুর, আমার মা জননী মা গো৷ কর্দমাক্ত তোমার পদযুগল জুড়ে রক্তের আলপনা৷ তোমার চুম্বনে কি বিষ ছিল? তুমি জানতে (সমীর)!!
মৃন্ময়ীর চুম্বনে ছিল রক্তস্নাত চাঁদের আলো
তুমি জানতে তোমার শিল্পভাষা। কালি কলমের নিকষ কালো তীক্ষ্ম বিষ অশ্রুজল হয়ে প্রতিনিয়ত ঝরে পড়বে৷ সর্পিল শীতলতায় আঁকা তোমার মাতৃমুখ৷ কালনাগিনীর ছায়ায় আর্টের শরীর প্রতিনিয়ত জর্জরিত৷
বিহঙ্গ ভঙ্গিমায় তোমার ছবির কাঠামো ভেঙে পড়ছে শীতল তারার আলোয়৷
No- No- No… মুখচ্ছবি আত্মজিজ্ঞাসার, সামাজিক কোন বোধের, নিজের মুখ, তোমার শিল্পের ওপর যে প্রতিবদ্ধকতা, প্রতিনিয়ত, বিশ্লেষক অভিব্যক্তি তোমার হাতের মুদ্রায় প্রতিফলিত৷ উপস্থাপনায় মুখাবয়ব রূপ কল্পনায় প্রতীকি ছায়া৷ এই নিঃশর্ত ভঙ্গিমা, তোমাকে এগিয়ে যেতে আকর্ষণ করে৷ শিল্প তোমার মুক্তির আবেগ৷ শব্দবন্ধে আপ্লুত তোমার সাদা কালো৷ বিমূর্ততায় বিভক্ত তোমার মানবীরূপ৷
তারা বারবার সামাজিক দায়বদ্ধতার নাগপাশ থেকে মুক্ত হতে চায়।
No N.R.C No CAA আমজনতার প্রতিমূর্তি, অনেকটাই কৌমসমাজের টোটেমপোল৷
ভঙ্গিমায় দীর্ঘ অপেক্ষার মেঘপুঞ্জ৷ জ্যামিতিক দীর্ঘাকৃতি দণ্ডায়মান-একক৷ একেক সময় মনে হয়, যেন- আদিম আফ্রিকার মানুষ এক, যা তোমার আমার কৌম প্রবৃত্তির মধ্যে প্রথিত৷ No C.A.A./No N.R.C যা তোমার আমার অসমযুদ্ধের এক সামাজিক বিভাজন৷ এই বিভাজন রেখার দাঁড়িয়ে কালধ্বনির চিৎকার No…No... No... না...না... না...
বিবসনা, এলায়িত অবিন্যস্ত চাহনি,
তোমার ভঙ্গিমায় নৃত্যরত কালরাত্রির ছায়া দু-হাতে প্রজ্বলিত প্রদীপের আলো ঠিক্রে পরে এই চরাচরে৷ Dancing Acrobatic Style সমীর চিহ্নিত করে প্রতিনিয়ত সাদা camvas প্রচ্ছদচিত্র তার সীমিত সময় গণ্ডী ছেড়ে দূর আলোর পথের সাথী হয়ে ওঠে৷ কোথায় যেন নাড়ি-নক্ষত্রের পতন শুনতে পাই৷ ত্রিনয়নীভাব আমাদের আবিষ্ট করে, এক নতুন Style-এ৷ বারবার এই কৌম, symbol তার মূর্তির মধ্যে বিশেষভাবে প্রোথিত হয়৷ স্তন, যোনি অবিন্যস্ত কেশবিন্যাস মহাকালের ঘোরের মধ্যে ঘূর্ণিজলের মতো পাক যায়- বলে এই যে আমি এই, অতিভঙ্গের এই যে আবর্তন তা অনেকাংশেই, এক আত্মজ অভিব্যক্তি৷ সর্বোপরি পরিচিত লতাগুল্ম আমাদের লোক মোটিফকে বারে বারে স্মরণ করায়৷ এই যে কাঠামোর মধ্যেকার তির্যক অভিব্যক্তি এটা সমীরের signatureই বলে আমি মনে করি৷
Dancing ego ফিরে দেখা মানুষ কোনো দোলাচলে ঘুরে ফেরে৷ অস্পষ্ট মৃদুভাষী হোলি খেলার মতো কালো রক্তের ছাপ আর ছাপ সমস্ত পট জুড়ে, জড়িয়ে থাকে, ‘সমীর’৷ এইভাবে প্রচ্ছদ পরিকল্পনার দুঃসাহস সমীরের মধ্যে ছিল৷ কেননা নদীর তট রেখা ধরে তার বেড়ে ওঠা, এগিয়ে চলা৷
সমীর কালধ্বনির পরতে পরতে আছে, থাকবে৷ এইটুকুই বলা৷ এই অধমকে ক্ষমা করবেন৷ আমি আমার শিল্পিত মন নিয়ে কিছু ভেতরের কথা বলার নামমাত্র চেষ্টা করলাম, সমীর আমাদের প্রাণের মানুষ৷ আমি বিশ্লেষক নই৷ এই লেখা আমার অন্তরের অভিব্যক্তি৷ এ কেবল প্রচ্ছদের Visual নিয়ে আলোচনা নয়, এ এক আত্মোপলব্ধির উন্মোচন৷
নারীমূর্তি সুবাসিত, পুষ্পলতাগুল্মে এলোমেলো, নৃত্যরতা ভঙ্গিমা অপলক৷ নৌকাবিহারিনী চাঁদমুখে বাসমতী আতপের সুগন্ধে লহরী বাঁক৷ এ যেন টুসুরাণীর বিসর্জনের শুরুয়াত৷ বাঁকুড়া ঘোড়ার হ্রেষাধ্বনি এক কোণে ঠাঁই নিয়ে, সূর্যমুখী আকাশের দিকে-- অপলক চাহনি তোমার ছায়াপথ ঘিরে থাকে৷
‘সমীরের’ তোমার রেখার বন্দনা আমাকে ফিরতি পথে আবার দাঁড় করায়৷
সম্মুখে দাঁড়িয়ে যে matador হাতে লাল কাপড়, অন্যহাতে তীক্ষ্ম শলাকা৷ দাঁড়িয়ে আছে একটি গতিময়তা আস্ফালনকে উপেক্ষা করে৷ এরিনা দর্শকাসনে সবাই আমরা তাকিয়ে আছি৷ এই বোধ হয় হাঁক পড়বে৷ এসো এসো এই অসমযুদ্ধে বীরের মত ঝাঁপিয়ে পড়৷
পরম শক্তিমত্তার সঙ্গে জনমানসের এক লড়াইয়ের ইতিহাস৷ লাল নিশান হাতে শিল্পী দাঁড়িয়ে আমরা দাঁড়িয়ে তোমরাও দাঁড়িয়ে এই ডাক এলো বলে৷
পেছনে আনুভূমিক মানবজমিন দেড়/তিন হাত৷ চওড়া কাঁধ৷ ফুটন্ত Chrysanthemum লালপাপড়ি মেলে ধরছে৷ নিশানে আজ রক্ত আগুনের ছোঁয়া৷ আকাশ মেঘ বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ছে যেন তোমার উত্তপ্ত তালুর মধ্যে৷