আমার একটুও চলে না তাকে ছাড়া 

কুণাল দেব

কুচকাওয়াজের ভারী বুটের ছন্দ আর কঠিন মুখের সারিবদ্ধ স্যালুট

যাকে উদ্দেশ্য করে, যে মহড়ায় বধ‍্যভূমির প্রস্তুতি-- 

সেখানে দাঁড়িয়ে, আটপেয়ে, চার মাথা সিংহের সম্মানে

আমার সত্তা পতাকায় পত পত করে ওড়ে।

আমি লালিত বাহন। সে যখন শিকারে বেরোয়, টোপ চায়। 

আমি এগিয়ে দি আমার সন্তানের নরম শরীর। 

সে যখন নর-মুণ্ড-মালা গলায় বাজায়, আমি দেখে খুশি হই। 

সে মালার সকল করোটি আমারই প্রতিযোগী, আমারই প্রতিবেশী। 

তার এই সাজের প্রশংসায় পাঁচ মুখে রক্ত তুলি। 

বিন্দু বিন্দু সে রক্ত সঞ্চয় করে যে সব কুবের সিন্ধু পারে বানায় প্রাসাদ-

শ্বাসে ফুসফুসে ভরিয়ে দেয় ত্রাস ও বিশ্বাস। বুক চাপড়ে ফাটাই নিজের পাঁজর। সর্বশ্রেষ্ঠ, অষ্টপদ সিংহ মহান!

সে যখন আমোদ-উল্লাসে নারী-পিণ্ড ছেঁড়ে, টিআরপি-আমোদ উর্ধ্বমুখী... 

এই জন-কল্যাণকামী নর-সিংহ ক্রীড়ায়, কখনওবা আমার বাধ্যতায় 

থাবা পড়ে। কিংবা, নখের আঁচড়। 

আপোষে এগিয়ে দেওয়া টোপ- শিকার হয় আমারই সন্তানের দেহ 

ছিন্নভিন্ন, রক্ত রস মেখে পড়ে থাকে নিথর নিশীথ কোনো বেওয়ারিশ ঘরে। 

আমি বিচার চাই।

আমি বিচার চাই তারই কাছে 

চার মাথার এক মুখ তদন্ত করে। অন্য মুখ বিচার করে। আর একটার গর্জন জয় ধ্বনি তোলে। 'গণতন্ত্রের জয়'!

এক জোড়া চরণ শাস্তি দিয়ে ছেঁটে ফেলে অন্য থাবায় বেড়ে ওঠা বেয়াদব  নখ। অন্য জোড়ার পাদস্পর্শে শান্তি পায় শরণাগতর আশ্রয়।