সমাজ অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক
কালধ্বনি
In Search of a decent living
জীবনের অন্বেষণে
সমাজ অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক
কালধ্বনি
In Search of a decent living
জীবনের অন্বেষণে
দুরন্ত পিপাসামাখা এই হাত ছুঁয়েছিল জল
দ্যাখো, এই শিরাজালে সেই আলো প্রবাহিত আজও
চোখের কোটর বেয়ে চলে যায় রুপালি ঝিনুক
যেইখানে ক্ষেত ছিল রয়েছে অতলস্পর্শী খাদ
কোটিবর্ষ পার করে সর্বনাশের মত উঠে আসে জল
জলস্রোত কালস্রোতে টেনে নেয় অগ্নি ও বিদ্যুৎ
আঙ্গুলে পিপাসামুদ্রা এই হাত ছুঁয়েছিল মুখ?
কতোটুকু ধরে বলো দু’হাতের অঞ্জলিতে
আর? তোমাকে তৃণাগ্রে ডাকি
যে ঘাস পবিত্র
যেই মুঞ্জতৃণ গোপন আসন পেতে
একান্ত আশ্রয় হবে নদীকূলে
তার কথা বলো
আজ সকালের রোদে
তোমার শব্দের তুলি রামকেলি এঁকে দিলে
স্রোতস্বিনী পুলকে আকুল
বহে যেতে মরুভূমি পথ তার? নির্জল প্রান্তর?
তাও থাক, তবু আজ ভোর
এক প্লাটফর্ম থেকে অন্য প্লাটফর্মে
একযাত্রা থেকে অন্য যাত্রার মাঝখানে
জনারণ্যে মুহূর্তে নির্জন
আকাশী চিলের ডাকে হঠাৎ শূন্য বেয়ে নামে
আর আমার চরাচর ভরে
ভেসে উঠল তোমার মুখ
চুলে ঝাঁঝি, মরচে ধরা কপাল
তুমি শুয়ে আছ ডুবে যাওয়ার নিচে।
শহরে যখন খুব কোলাহল ওঠে
স্বজনেরা ছেড়ে যায় সারি বেঁধে দুপুর রোদ্দুরে
কান ফাটানো হুইসলের শব্দে তুমি কাঁদো
সমস্ত শেকলের শব্দ ছাপিয়ে
চিলের ডাকে, ভারী ইঞ্জিনের হৃৎপিন্ডের মর্মরে
তোমার সেই গুমরে ওঠা
আজ আমার বুকের শিরায় টান দিল
গরম পাথর থেকে ভাপ ওঠে
গহন কাজলে আঁকা তিনটি চোখ
বিপুল আঁধার থেকে উঠে আসে আসে ছিন্নমস্তা
স্বশোণিত পিপাসিতা উগ্রকালী নেতিস্বরূপিণী
তখনও এখানে ছিলে? কথিত সে শান্তিকালে?
তখনও খণ্ড খণ্ড দীর্ণচিহ্নে
তীব্র পদছাপ? নিজের কন্ঠছেঁড়া রক্তিম ফিনিক
নিজের কপালপাত্রে ধরা।
তবুও পিপাসা জ্বলে শুকনো জলে
পাথরে আগুন
আঙুলের নষ্টসৃষ্টি তোর
সিঁদূরে কাজলে ভাসা
তিনজোড়া আত্মঘাতী চোখ
মধ্যরাত্রে সুহৃদময় বিছানা ছেড়ে নেমে দরজা খুলে বেরিয়ে যাচ্ছে আমার পৃথিবী। এসে দাঁড়াচ্ছে খুব আকাশের ঘর-ছাড়ানো সর্বনাশের নিচে যেখানে ঝরাপাতা আর টুপিয়ে পড়া জলের শব্দ মিলেমিশে এক রাস্তা হারানোর দিকে খুব চলে যেতে থাকে। এখন সে কোথায় যেতে চায় যখন কোনো মানুষই স্পষ্ট করে দেখতে পাবে না নিজের মুখ? ঝিঁঝির ডাকে চাপা পড়ে যাবে শিরার ভিতর নিজের রক্তধারার ফিসফিস? রাত্রি মাথায় নিয়ে যখন সন্ধ্যা এসেছিল তখন থেকেই ওর মজ্জায় কুয়াশার বিষ। অন্ধকারের কৃষ্ণাজিনে তা গাঢ় হল প্রগাঢ়তম। এখনো তো কোনো পথ দেখা দিল না, আঁচল মেলে, আমাকে এখানেই ফেলে রেখে ধুলো পায়ে ও যাচ্ছে কোথায়? কার ডাকের দিকে?
তানের তরঙ্গ লেগে পৃথিবী উথলে ওঠে
বিদ্যুতে ছড় টানে মিয়া কি মলহার
ব্যথার চমক লেগে থমকে থাকে হাওয়া
পাথরও পুলকে গলে
অশ্রুধারা হয়ে তার গান বাজে জলদে ঝালায়
ভরাজল ভরাজল এস’
এই মুখে বুকে বৃষ্টি হয়ে ঝরো
আমাকে ডোবাও বারবার মগ্ন করো
নিমজ্জিত করে নাও। গভীর গম্ভীর ধারা আমাকে ভাসাও স্রোতপথে
ভরে যাক প্রতীক্ষার মাঠঘাট উচুনিচু টিলা ডুংরি
শুকনো মাঠে আসুক আসুক তৃণদল
ভরাজল এস’
জ্বলে যাওয়া অরণ্যে আবার
জাগুক অক্ষরগুল্ম। শুষ্ক তারা মাঠে
ফুল হয়ে ফুটে থাক পাখিদের গান