সমাজ অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক
কালধ্বনি
In Search of a decent living
জীবনের অন্বেষণে
সমাজ অর্থনীতি ও সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক
কালধ্বনি
In Search of a decent living
জীবনের অন্বেষণে
এক
Stockholm International Peace Research Institute-এর রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৯ সালে বিশ্বে সামরিক খাতে খরচের শতকরা ৬২ ভাগ পাঁচটি রাষ্ট্র খরচ করেছিেলা। পর্যায়ক্রমে রাষ্ট্রগুলোর নাম— মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, রাশিয়া ও সৌদি আরব। SIPRI-র সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মুহূর্তে বিশ্বের প্রথম অস্ত্র আমদানিকারক রাষ্ট্র সোদিআরব ও দ্বিতীয় ভারত। ভারতকে অস্ত্র সরবরাহকারী রাষ্ট্রসমুহ যথাক্রমে রাশিয়া, ফ্রান্স, ইজরায়েল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
পঞ্চম রাষ্ট্র সৌদি আরব গত ছয় বছর ধরে ইয়েমেনে লাগাতার বোমা বর্ষণ ও মিসাইল নিক্ষেপ করে চলেছে। ২০২০-র শেষ দিনেও ইয়েমেনের রাজধানী সানার পনেরোটা স্থানে সৌদি আরবের বোমারু বিমান হানা দিয়েছে। এর আগের দিন ৩০ ডিসেম্বর সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াধে নির্বাসিত ইয়েমেনি সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যরা ইয়েমেনের এডেন বিমান বন্দরে যখন নামেন সেখানে এক বিষ্ফোরণ ঘটানো হয়। এই বিষ্ফোরণে মন্ত্রিসভার সদস্যরা কেউ আহত না হলেও, কুড়িজন সাধারণ মানুষ নিহত হন। এদের মধ্যে ৫ জন আন্তর্জাতিক রেডক্রস-এর ও ১৫জন এডেন বিমান বন্দরের কর্মী।
২০১৪-এর সেপ্টেম্বরে হুথি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা ইয়েমেনের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আলি আব্দুল্লা সালের প্রতি অনুগত সামরিক বাহিনীর ইউনিটগুলোর সহায়তায় ইয়েমেনের রাজধানী সানায় ঢুকে পড়ে। তারা রাষ্ট্রপতিভবন সহ সরকারি ভবন ও সামরিক দপ্তরগুলোতে হামলা চালায়। রাষ্ট্রপতি মনসুর হাদি ও তার সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। হুথি সশস্ত্রগোষ্ঠী রাজধানী সানা সহ আরও কিছু অঞ্চল দখল করে নেয়। ইয়েমেনের সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতি হাদি সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াধে আশ্রয় নেন ও সেখান থেকেই সরকার পরিচালনা করতে থাকেন। ২০১৬-এর ফেব্রুয়ারীতে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে হুথির সমালোচনা করে এক প্রস্তাব গৃহীত হয়। রাষ্ট্রপতি হাদি পরিচালিত সরকার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়। হুথি সশস্ত্র গোষ্ঠী ও সহযোগী সৈন্যদের মোর্চা এবং রাষ্ট্রপতি হাদির অনুগত সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের সূচনা হয়।
হুথি ইয়েমেনের অন্যান্য অঞ্চল দখল করতে চায়। হুথিকে রুখতে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি সহ নয়টি রাষ্ট্রের কোয়ালিশন হাদি সরকারের সমর্থনে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। গত বছরের শেষের দিকে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এই কোয়ালিশন থেকে বেরিয়ে আসে ও Southern Transitional Council নামে ইয়েমেনের আর একটা সশস্ত্র গোষ্ঠীকে মদত দিতে থাকে। ৩০ ডিসেম্বর এডেন বিমান বন্দরে বিষ্ফোরণ ঘটানোর জন্য এই সংগঠনটাকেই দায়ী করা হচ্ছে। সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন এই কোয়লিশন হুথি নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে ২০১৫-এর ২৫ মার্চ বোমাবর্ষণ শুরু করে এবং গত ছয় বছর ধরে বিমান হানা ও মিসাইল নিক্ষেপ করে চলেছে। শুধু সামরিক ঘাঁটি নয়। বাসভূমি, ইস্কুল, হাসপাতাল অনুষ্ঠানবাড়ি সবকিছুই আক্রমণের লক্ষ্য। ইয়েমেন এখন ধ্বংসস্তপে পরিণত। হুথি সশস্ত্র গোষ্ঠীও রাষ্ট্রপতি হাদির অনুগত সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা অঞ্চলগুলোতে নির্বিচারে মর্টার আক্রমণ চালায়। ছয়বছর ধরে চলতে থাকা এই সংঘর্ষে এক লক্ষেরও বেশি সাধারণ মানুষ মারা গেছেন। শুধু বোমাবর্ষণ বা মিসাইল নিক্ষেপেই ক্ষান্ত হয়নি, আকাশ, জল, স্থল তিনপথেই সৌদি আরব ইয়েমেনকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। জ্বালানির অভাবে পাম্প চালানো যাচ্ছে না। সেচ কার্য বন্ধ থাকার ফলে চাষ বন্ধ। জিনিসপত্রের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি ও কার্যহীনতা ইয়েমেনের মানুষদের অভুক্ত থাকতে বাধ্য করছে। ত্রাণই এখন ইয়েমেনিদের ভরসা। অবরোধের ফলে ত্রাণও ঠিকমত পৌঁছায় না। রাজধানী সানার হাসপাতালগুলোতে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের ভীড়। সংবাদপত্রে ছয় বছর বয়সী শামিমের ছবি ছাপা হয়েছে, শামিমের ওজন ছয় কিলোগ্রামেরও কম। শামিম ‘সিভিয়্যার অ্যাকিউট ম্যালনিউট্রিশন’-এর শিকার। রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ইয়েমেনে ভয়ঙ্কর দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে চলেছে। এই দুর্ভিক্ষ বিগত কয়েক দশকে মানুষ প্রত্যক্ষ করেনি।
সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহী বর্তমানে ভারতের দুই বন্ধু রাষ্ট্র। ২০১৭ সালে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর যুবরাজ মহম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান ও ২০১৯ সালে সৌদি আরবের যুবরাজ মহম্মদবিন সলমান ভারত সফরে এলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিমান বন্দরে উপস্থিত হয়ে তাদের আলিঙ্গন করেন। সংযুক্ত আরব আমিরশাহী সফরকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ওই রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান অর্ডার অব জায়েদ অর্জন করেন। সৌদি আরব নরেন্দ্র মোদীকে রাজা আব্দুল্লা শাহ পুরস্কার প্রদান করেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এম এম নরবানে গত ডিসেম্বরে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী সফরে গিয়েছিলেন। এই দুই রাষ্ট্রের সঙ্গে ইজরায়েলের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বন্ধু রাষ্ট্রগুলোকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রি করার কথা ঘোষণা করেছেন। এর মধ্যে আছে আকাশ মিসাইল সিস্টেম। ভূমি থেকে আকাশ— এই মিসাইল ২৫ কি.মি. দূরের লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত হানতে সক্ষম। হয়তো, আগামীদিনে ইয়েমেনে এই মিসাইল আছড়ে পড়বে।
ভারতের তিন বন্ধু রাষ্ট্র ইজরায়েল, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর বিরুদ্ধে বিশ্বের যুদ্ধবিরোধী মানুষেরা সোচ্চার। ইজরায়েল প্যালেস্টাইনে ও বাকি দুটি রাষ্ট্র ইয়েমেনে সাধারণ মানুষদের হত্যা করে নিজেদের হাত রাঙিয়েছে। সম্প্রতি International Criminal Court (ICC) রায় দিয়েছে, প্যালেস্টাইন ভূমিখন্ডে ইজরায়েল আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করে যে সমস্ত কার্যকলাপ চালাচ্ছে তা যুদ্ধ-অপরাধ কিনা, সেই বিষয়ে অনুসন্ধান করে দেখা হবে। ইজরায়েলের যুক্তি ICC তা করতে পারে না। কারন, ইজরায়েল ICC তে যোগ দেয় নি। ভারতও ICC তে যোগ দেয় নি। Rome Statute-এর খসড়া রচনাকালে ভারত সক্রিয় অংশগ্রহন করলেও, পরবর্তীতে ভারতের আশঙ্কা হয় কাশ্মীরে ICC অনুসন্ধান চালাতে পারে। তাই ভারত এই statute-এ স্বাক্ষর দান করেনি। ICC-র রায় ঘোষনার পর ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে তাদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করেছেন। ভারত সরকার এই বিষয়ে এখন পর্য্যন্ত নিরপেক্ষ আছে। ছয় বছর আগে UN Human Rights Council-এ ইজরায়েলের বিরুদ্ধে এক প্রস্তাব গ্রহনের সময় ভারত ভোটদানে বিরত ছিল। সেই সময়ও ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করেছিলেন বন্ধুত্বের তাগিদে ভারত ভুটানকে ইজরায়েলের সাথে কুটনৈতিক সম্পক স্থাপনে বাধ্য করেছে। এই যুদ্ধবাজ রাষ্ট্রপ্রধানদের রক্তরাঙানো হাতের সঙ্গে করমর্দন করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী গর্বিত। কারন তিনিও রক্ত দিয়ে হাত রাঙাতে ভালবাসেন।
দুই
উত্তরপ্রদেশ সরকারের হাতিয়ার Unlawful Religious Conversion (Prohibition) Ordinance, 2020 এবং মধ্যপ্রদেশ সরকারের হাতিয়ার Madhya Pradesh Dharma Swatantra Vidheyah 2020 (MP Freedom of Relogion Bill)। এই দুই হাতিয়ারের লক্ষ্য এক - মুসলিম ছেলেদের জেলে পুরতে হবে ও হিন্দু মেয়েদের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে হবে। ২০১৪তে বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও বিহারে পথসভা ও পোস্টারের মাধ্যামে মুসলিম বিরোধী প্রচার চলতে থাকে। মুসলিম তরুণদের অপরাধী হিসাবে চিহ্নিত করা হয় এবং এরা ধর্ষণ, অপহরণ এইসমস্ত অপরাধমূলক কাজকর্মে সিদ্ধহস্ত। মুসলিম তরুণরা বিদেশ থেকে অর্থ পায় ও সেই অর্থে দামি পোষাক, মোবাইল কিনে হিন্দু মেয়েদের প্রলুব্ধ করে ও বিয়ের প্রস্তাব দেয়। হিন্দু মেয়েরা প্রলোভিত হয়ে বিয়ের আগে ধর্মান্তরিত হয়।
বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার এক বছর আগে ২০১৩ তে উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগরে এক সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে ৫০ জন ব্যক্তি মারা যান ও ৫০,০০০-এর ওপর মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হন। দুজন জাঠ তরুণ, গৌরব ও সচিন তাদের বোনকে উত্যক্ত করার অভিযোগে একজন মুসলিম তরুণকে হত্যা করেন। এরপর ঐ দুই জন জাঠ যুবকও খুন হয়ে যান। তাদের খুনের অভিযোগে সাতজন মুসলিম দোষী সাব্যস্ত হন ও তাদের যাজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।
গৌরব ও সচিন খুন হয়ে যাওয়ার পর তিন বিজেপি নেতার সঙ্গীত সোম, সুরেশ রানা ও সঞ্জীব বালিয়ান ইন্ধনে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এই সঙ্গীত সোম, ২০১৪ থেকে ইন্টার-ফেইথ বিয়ের (বিজেপির ভাষায় 'লাভ জেহাদ') বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচার শুরু করেন। ২০২০-র নভেম্বরে তিনি সমাজ মাধ্যমে বলেন, “You must teach the love jihadis a lesson. Danda urthao ya juta, but teach these love jihadis a lesson. It is up to the Hindus to protect their sisters and daughters”।
হিন্দু মেয়েদের মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করাটা আটকাতে হবে - তা সে বলপ্রয়োগ করেই হোক বা আইনের সাহায্যেই হোক। ২০২০-র ৩১ অক্টোবর এক নির্বাচনী সভায় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছিলেন,I warn those who conceal identity and play with our sister's respect, if you don't ment your ways, your Raam Naam Satya journey will begin'।
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে থেকেই যোগী আদিত্যনাথ ইন্টার-ফেইথ বিয়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। ২০২০-র আগস্টে মুখ্যমন্ত্রী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে 'লাভ জেহাদ' বন্ধ করার জন্যনিরদেশ দেন। কানপুরে ১৪টা ইন্টার-ফেইথ বিয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ পুলিশের কাছে দায়ের করা হয়। মেয়েদের পরিবারের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ দায়ের করতে উৎসাহ যোগায়। এই ধর্মান্তকরণ ও বিয়েগুলো সম্পর্কে অনুসন্ধান চালানোর জন্য কানপুরে সিট (SIT) কে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সিট তদন্ত করে জানায়, এই বিয়েগুলোর পিছনে কোন ষড়যন্ত্র বা কোন সংগঠনের ভূমিকা বা বিদেশি অর্থের খেলা নেই। কিন্তু ৩৬৩ ও ৩৬৬ ধারায় (অপহরণ ও জোর করে বিয়ে) মুসলিম তরুণদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। তিনজন মেয়ে সাবালিকা ছিলেন। তারা জানান স্বেচ্ছায় তাঁরা বিয়ে করেছেন। কিন্তু এই তিনটে বিয়ের ক্ষেত্রে তিনজন মুসলিম যুবককে জেলে পাঠানো হয়। প্রকৃতপক্ষে, ক্রাইম ব্যুরো অপরাধ সংক্রান্ত যে সব তথ্য পেশ করে তাতে হিন্দু মেয়েদের অপহরণ বা মুসলিম ছেলেদের বিয়ে করতে বাধ্য করা সংক্রান্ত কোন তথ্য থাকেনা।
উত্তরপ্রদেশ সরকার যে অর্ডিন্যান্স জারি করেছে, তাতে বলা হয়েছে ধর্মান্তরিত মেয়েটাকেও জেলে পোরা হবে, স্বেচ্ছায় ধর্মান্তরিত হলেও। আসলে এই অর্ডিন্যান্স মেয়েদের সুরক্ষার নামে তাদের নিজেদের পছন্দমত বিয়ে করার অধিকার কেড়ে নিয়ছে। আইনজীবী রাম পুনিয়ানির মতে, “The 'love jehad' propaganda is a double-edged weapon. By stating that Muslim youth are being trained to lure Hindu girls, onthe one hand they domise Muslims and on the other, they tighten their control of the lives of girls and women. In this propaganda, Hindu women are projected as gullible, easy to be lured and incapable of deciding for themselves. In a way, the communal agenda's twin goals are achieved here. Communal politics wants to marginalise the religious minorities at the ddeeper societal level it aims to restrict the rights and freedom of women.’’
হিন্দু মেয়েদের মুসলিম ছেলে বিয়ে করা আটকাবার জন্য অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়েছে। অথচ, হিন্দু ছেলেরা মুসলিম মেয়ে বিয়ে করতে পারে ও মুসলিম মেয়েরা হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করতে পারে। বজরং দল হিন্দু ছেলেদের অহিন্দু মেয়েদের উৎসাহিত করার জন্য শ্লোগান তুলেছে 'বহু লাও, বেটি বাচাও'।
'Demographic aggression' - হিন্দুদের মধ্যে এই ধারণা তৈরি করা হয়েছে। মুসলিমদের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে ও হিন্দুরা ভারতে একদিন সংখ্যালঘুতে পরিণত হবে। ২০১১-এর জনগণনা অনুযায়ী, হিন্দু জনসংখ্যা ছিল ৯৬৬.৩ মিলিয়ন (৭৯.৮%), মুসলিম জনসংখ্যা ১৭২.২ মিলিয়ন (১৪.২%), খ্রীষ্টান ২৭.৮ মিলিয়ন (২.৩%), শিখ ২০.৮ মিলিয়ন (১.৭%)। এক দশকে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ জন্মহার বৃদ্ধি নয়। মুসলিম মহিলা ও শিশুকন্যাদের মৃত্যুহার কমে গেছে।
মুসলিম ছেলেরা হিন্দু মেয়েদের বিয়ে করে ভারতে হিন্দুদের সংখ্যালঘুতে পরিণত করবে - বিজেপি ও তার সহ সংগঠনগুলোর এই disformation campaign-এর উদ্দেশ্য হিন্দুদের মধ্যে মুসলিম বিদ্বেষ জাগিয়ে তোলা আর মুসলিমভীতির ভয় দেখিয়ে হিন্দু মেয়েদের পায়ে বেড়ি পড়ানো। বিজেপি, আর এস এস, হিন্দুমহাসভা, বজরং দল এই সংগঠনগুলো শুধু মুসলিম বিদ্বেষী নয়, নারী বিদ্বেষীও।
সূত্রঃ Frontline, 18 December, 2020